স্বদেশ ডেস্ক: জার্মান নারী লিজেল হেইস। বয়স পাক্কা ১০০ বছর। দক্ষিণ-পশ্চিম জার্মানির কির্চহেইমবোলাডেনের বাসিন্দা। যে বয়সে অনেকেই ইহকালের মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমান, কেউ শক্তি হারিয়ে ক্ষীণবল হয়ে লাঠিহাতে চলাফেরা করেন, সেই বয়সে এখনও প্রাণশক্তিতে ভরপুর লিজেল। শুধু তাই নয়, এই বয়সে রাজনীতিতে যোগ দিয়ে ভোটের মাঠ কাঁপাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি স্থানীয় নগর কাউন্সিল নির্বাচনে জিতে হইচই ফেলে দিয়েছেন এই নারী। লিজেলের রাজনীতিতে যোগদানের বাসনা তৈরি হয় মূলত ১০০ বছর পূর্তির কয়েক বছর আগেই। জার্মানিতে চরমপন্থা ও বর্ণবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাঠে নামেন। কিন্তু স্থানীয় টাউন হলের সামনে এক দিন নগর সমস্যা নিয়ে বক্তৃতাকালে তার মাইকের তার কেটে দেয় স্থানীয় কিছু মানুষ। সেই রাগ ও ক্ষোভ থেকে তার মনোবল আরও চাঙ্গা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রথম যখন রাজনীতি শুরু করি, কিছু লোক আমার কথা মন দিয়ে শুনত না। কেউ কেউ আমার মাইকের প্লাগও খুলে দিত।’ তিনি বলেন, ‘এখন সারা পৃথিবী থেকে মানুষ আমার সঙ্গে কথা বলতে আসে। এখন আর কে হাসে।’
লিজেল ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষিকা। কিন্তু ৪০ বছর আগেই অবসর চলে যান। এরপর এক রকম নিভৃত জীবনযাপন করছিলেন। সম্প্রতি স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে নিজের বাড়ির বাইরে একটি সাঁতার শেখার পুল চালু করেছেন তিনি। এখনও প্রতিদিন খুব ভোরে উঠে ৮ হাজার অধিবাসী নিয়ে কির্চহেইমবোলাডেনের পুরনো শহরে কয়েক কিলোমিটার হাঁটাহাঁটি করেন লিজেল। এরপর স্থানীয় তরুণ-তরুণীদের নিয়ে পুলে সাঁতার কাটা। মূলত ওই পুলে আসা তরুণ-তরুণীরাই তার রাজনীতিতে নামার প্রেরণা বলে জানান লিজেল। রাজনীতিতে লিজেল যে ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করেন তার মধ্যে রয়েছে চরমপন্থী ও বর্ণবাদ যা ২০১৭ সালে অস্ট্রিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে জার্মানিতেও। রয়েছে তরুণ প্রজন্ম, জনস্বাস্থ্য জলবায়ু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুও। বর্ণবাদ রুখতে ওমান জিজেন রেইটস নামে রাজনৈতিক দলও গড়ে তুলেছেন তিনি। সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে চলতি বছরই কির্চহেইমবোলাডেন কাউন্সিল নির্বাচনে জয় পেয়েছে তার দল।